ওহীর প্রকারভেদ


ওহীর প্রকারভেদ সম্পর্কে আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম যে আলোচনা করেছেন তা নিম্নে লিপিবদ্ধ করা হলোঃ

১. সত্য স্বপ্নঃ নবুওয়াতের প্রাথমিক অবস্থায় স্বপ্নের মাধ্যমে নাবী কারীম (সাঃ) এর উপর ওহী অবতীর্ণ হয়।

২. ফেরেশতা না দেখা দিয়ে অর্থাৎ অদৃশ্য অবস্থান থেকেই রাসূল (সাঃ) এর অন্তরে ওহী প্রবেশ করিয়ে দেন। এ প্রসঙ্গে নাবী কারীম (সাঃ) যেমনটি ইরশাদ করেছেন:

"জিবরাঈল (আঃ) ফেরেশতা আমার অন্তরে এ কথা নিক্ষেপ করলেন যে, কোন আত্মা সে পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করবে না যে পর্যন্ত তার ভাগ্যে যতটুকু খাদ্যের বরাদ্দ রয়েছে পুরোপুরিভাবে তা পেয়ে না যাবে। অতএব তোমরা আল্লাহকে সমীহ কর এবং রূজী অন্বেষণের জন্য ভাল পথ অবলম্বন কর। রূজী প্রাপ্তিতে বিলম্ব হওয়ার কারণে তোমরা আল্লাহর অসন্তোষের পথে অন্বেষণে যেন উদ্বুদ্ব না হও। কারণ আল্লাহর নিকট যা কিছু রয়েছে তা তার আনুগত্য ছাড়া পাওয়া দুস্কর।"

৩. ফেরেশতা মানুষের আকৃতি ধারণাপূর্বক নাবী কারীম (সা.) কে সম্বোধন করতেন। তারপর তিনি যা বলতেন নাবী কারীম (সা:) তা মুখস্থ করে নিতেন। এ অবস্হায় সাহাবীগণ (রা.) ও ফেরেশতাকে দেখতে পেতেন।

৪. ওহী অবতীর্ণ হওয়ার সময় নাবী কারীম (সা.) এর নিকট ঘন্টার টুন টুন ধ্বনির মতো ধ্বনি শোনা যেত । ওহী নাযিলের এটাই ছিলো সবচেয়ে কঠিন অবস্থা । ওহী নাযিলের সময় কঠিন শীতের দিনেও রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কপাল থেকে ঘাম ঝরতে থাকে।

৫. নাবী কারীম (সা.) ফেরেশতাকে কোন কোন সময় নিজস্ব জন্মগত আকৃতিতে প্রত্যক্ষ করতেন এবং আল্লাহর ইচ্ছায় সেই অবস্হাতেই তিনি তাঁর নিকট ওহী নিয়ে আগমন করতেন। নাবী কারীম (সা.) এর এ রকম অবস্থা দু'বার সংঘটিত যা আল্লাহ তা'আলা সূরা নাজমে' উল্লেখ করেছেন।

৬. পবিত্র মি'রাজ রজনীতে রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন আকাশের উপর অবস্থান করেছিলেন সেই সময় আল্লাহ তাআ'লা সালাত এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে সরাসরি হুকুমের মাধ্যমে ওহীর ব্যবস্হা করেছিলেন।

৭. আল্লাহ তাআ'লা সঙ্গে নাবী কারীম (সা.) এর সরাসরি কথোপকথন যেমনটি হয়েছিল, তেমনি মূসা (আ.) এর সঙ্গে হয়েছিল মূসা (আ.) এর সঙ্গে যে আল্লাহর তাআ'লা কথোপকথন হয়েছিল কুরআন কারীমে তা প্রমাণিত হয়েছে কিন্তু আল্লাহ তাআ'লার সঙ্গে নাবী কারীম (সা.) এর কথোপকথন ব্যাপারটি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে (কুরআন দ্বারা নয়)।

সূত্রঃ আর রাহীকুল মাখতুম, ১০০ পৃঃ

Post a Comment