হজ্জ্ব বিষয়ক হাদীস


●●● ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) আমাদেরকে খেতাব করলেন (খুতবাহ দিলেন): আল্লাহ তা'আলা তোমাদের উপর হজ্জ্ব ফরজ করেছেন। (একথা শুনে) আকরা বিন হাবিস দাঁড়িয়ে গেল আর বলল, প্রতি বছরই কি (ফরয) হে আল্লাহর রাসূল! তিনি (সা) বললেন- আম তা বললেই তোমাদের উপর ওয়াজিব হয়ে যেতো। হজ্জ্ব একবারই ফরয। আল যা বাড়তি করবে সেটা নফল হিসেবে পরিগণিত। -[আবু দাউদঃ ১৭২১; নাসায়ীঃ ২৬২০; ইবনু মাজাহঃ ২৮৮৬]

●●● ইবনু আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবি (সা) ইহরাম বাঁধার স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন, মদিনাবাসীদের জন্য যুল-হুলায়ফা, সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহফা, নজদবাসীদের জন্য কারনুল মানযিল, ইয়ামানবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম। হজ্জ্ব ও উমামাহ নিয়্যাতকারী সেই অঞ্চলের অধিবাসী এবং ঐ সীমারেখা দিয়ে অতিক্রমকারী অন্যান্য অঞ্চলের অধিবাসী সকলের জন্য উক্ত স্থানগুলো মীকাতরুপে গণ্য এবং যারা এ সব মীকাতের ভিতরের স্থানের অধিবাসী, সেখান হতে হজ্জের নিয়্যাত করে বের হবে (ইহরাম বাঁধবে)। এমনকি মক্কাবাসী মক্কা হতেই (হজ্জের) ইহরাম বাঁধবে। -[বুখারীঃ ১৫২৪, ১৫২৬; মুসলিমঃ ১১৮১, ১১৮৯; নাসায়ীঃ ২৬৫৪; ২২২৪]

●●● আল হাজ্জাজ ইবনে আমর আল আনসারী (রা) বলেন, আমি নাবী (সা) কে বলতে শুনেছিঃ "(ইহরাম বাঁধার পর) যার হাড় ভেঙ্গে অথবা লেংড়া হয়ে গেল, সে ইহরামমুক্ত হয়ে গেলো। সে পরবর্তী বছর হজ্জ্ব করবে।" -[আবু দাউদঃ ১৮৬২; তিরমিযীঃ ৯৪০; নাসায়ীঃ ২৮৬০]

●●● আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল (সা) বলেছেনঃ "এক উমরাহর পর আর এক উমরাহ উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের (গুনাহের) জন্য কাফফারা। আর জান্নাতই হলো হাজ্জ্বে মাবরুবের প্রতিদান।" -[বুখারীঃ ১৭৭৩; মুসলিমঃ ১২৪৯]

●●● আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল (সা)! মহিলাদের জন্য কি জিহাদ বাধ্যতামূলক? তিনি বলেনঃ তাদের উপরও জিহাদ ফরয, তবে তাতে অস্ত্রবাজি নাই। তা হচ্ছে হজ্জ্ব ও উমরাহ। (শব্দ বিন্যাস ইবনু মাজাহর, এর মূল রয়েছে বুখারীতে) -[বুখারীঃ ১৮৬১, ২৭৮৪; নাসায়ীঃ ২৬২৮]

●●● ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। নাবী (সা) এর সঙ্গে রাওহা নামক স্থানে একদল যাত্রীর সাক্ষাত হলে তাদেরকে বললেন, তোমরা কে? তারা বললো, (আমরা) মুসলিম। তারপর তারা জিজ্ঞেস করল, আপনি কে? তিনি বললেন- (আমি) আল্লাহর রাসূল! এ সময় জনৈক মহিলা তার বাচ্চা তুলে ধরে বললো, এর কি হজ্জ্ব আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তবে তার নেকী তুমি পাবে। -[মুসলিমঃ ১৩৩৬; নাসায়ীঃ ২৬৪৫, ২৬৪৬; আবু দাউদঃ ১৭৩৬]

●●● ইবনু আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুহাইনা গোত্রের এক মহিলা নাবী (সা) এর নিকট এসে বললেন, আমার আম্মা হজ্জের মান্নত করেছিলেন তবে তিনি আদায় না করেই ইন্তিকাল করেছেন। আমি কি তার পক্ষ হতে হজ্জ্ব করতে পারি? আল্লাহর রাসূল (সা) বলেনঃ তার পক্ষ হতে তুমি হজ্জ্ব আদায় কর। তুমি এ ব্যাপারে কি মনে কর যদি তোমার আম্মার উপর ঋণ থাকত তা হলে কি তুমি আদায় করতে না? সুতরাং আল্লাহর হক আদায় করে দাও । কেননা আল্লাহর হকই সবচেয়ে বেশি আদায়যোগ্য। -[বুখারীঃ ১৮৫২, ৬৬৯৯; নাসায়ীঃ ২৬৩৩]

●●● ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) এক ব্যক্তিকে বলতে শুনলেনঃ 'শুবরুমার পক্ষ থেকে আমি তোমার কাছে হাযির হয়েছি'। রাসূলুল্লাহ (সা) জিজ্ঞেস করলেনঃ শুবরূমা কে? সে বললো, আমার ভাই, অথবা বললো আমার নিকট আত্মীয় । তিনি বললেনঃ তুমি কি কখনও নিজের পক্ষ হতে হজ্জ্ব করেছো? সে বললো, না। তিনি বললেনঃ তাহলে তোমার নিজের পক্ষ থেকে আগে হজ্জ্ব করো, অতঃপর শুবরূমার পক্ষ থেকে হজ্জ্ব করো। -[আবু দাউদঃ ১৮১১; ইবনু হিব্বানঃ ৯৬২]

●●● আয়িশা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হাজ্জাতুল বিদার বছর আমরা নাবী (সা) এর সঙ্গে বেড় হই। আমাদের মধ্যে কেউ কেবল উমরাহর ইহরাম বাঁধলেন, আর কেউ হজ্জ্ব ও উমরাহ উভয়টির ইহরাম বাঁধলেন। ফলে যারা কেবল উমরাহর জন্য ইহরাম বেঁধেছিলেন তাঁরা (উমরাহ সমাধা করে) হালাল হলেন আর যারা হজ্জ্ব বা হজ্জ্ব ও উমরাহ উভয়ের জন্য ইহরাম বেঁধেছিলেন তাঁরা কুরবানীর দিন না আসা পর্যন্ত হালাল হতে পারলেন না। -[বুখারীঃ ১৫১৮, ১৫৫৬; মুসলিমঃ ১২১১; বুলুগুল মারামঃ ৭২৭]



Post a Comment