নির্বাচিত ১০০ হাদীস




২৬/১০০. ইবনু মাসউদ (রা) বলেন, রাসূল (সাঃ) বলেছেন,

"নারী হচ্ছে গোপন বস্তু। যখন সে বাড়ি থেকে বের হয়, তখন শয়তান তাকে নগ্নতার প্রতি ক্ষিপ্ত করে তুলে।"

- [তিরমিযী, মিশকাত হা/ ৩১০৯]


২৭/১০০. আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রসূল (সা) বলেছেনঃ

"লজ্জা হচ্ছে ঈমান। ঈমান হচ্ছে জান্নাত লাভের মাধ্যম।"

- [আহমাদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/ ৪৮৫৫]


২৮/১০০. উমার (রা) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেনঃ

"অবশ্যই কোন পুরুষ কোন নারীর সাথে নির্জনে একত্রিত হলে, তৃতীয় জন হবে শয়তান।"

- [তিরমিযী, মিশকাত হা/ ২৯৮৪]


২৯/১০০. ইবনু উমর (রা) বলেন, রাসূল (সা) বলেছেনঃ

"তিন শ্রেণীর লোক জান্নাতে যাবে না- (১) পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান (২) বাড়ীতে বেহায়াপনার সুযোগ প্রদানকারী (দাঈয়ুস) (৩) পুরুষের বেশ ধারণকারী নারী।"

- [নাসাঈ হা/২৫৬২; তারগীব হা/২৯৬৫]


৩০/১০০. আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেনঃ

"পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহ সন্তুষ্ট, আর পিতা-মাতার অসন্তুষ্টিতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট।"

- [তিরমিযী, মিশকাত হা/ ৪৭১০]


৩১/১০০. আবু উমামাহ (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ তিন শ্রেণীর মানুষের ফরয-নফল ইবাদাত আল্লাহ কবুল করেন না।

১. পিতা-মাতার অবাধ্য ব্যক্তি,
২. খোটাদানকারী,
৩. ভাগ্য অস্বীকারকারী ।

- [তারগীব হা/ ৩৫৭৩]


৩২/১০০. মু'আয ইবনে জাবাল (রা) বলেন, রাসূল (সা) আমাকে দশটি বিষয়ে উপদেশ দিয়েছেন। তিন বলেছেনঃ

(১) আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না, যদিও তোমাকে নিহত করা হয় বা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
(২) তুমি তোমার পিতা-মাতার অবাধ্য হবে না, যদি তারা তোমাকে তোমার পরিবার-পরিজন ও মাল-মাত্তা ছেড়ে যেতে বলেন।
(৩) ইচ্ছা করে কখনও ফরয সালাত ছাড়বে না। কেননা যে ইচ্ছা করে ফরয সালাত ছেড়ে দেয়, তার (হেফাজতের) পক্ষে আল্লাহর প্রদত্ত দায়িত্ব উঠে যায়।
(৪) কখনও শরাব পান করবে না। কেননা তা সসমস্ত অশ্লীলতার মূল।
(৫) সাবধান! গোনাহ হতে বেঁচে থাকবে । কেননা গোনাহ দ্বারা আল্লাহর ক্রোধ পৌঁছে থাকে।
(৬) খবরদার! জিহাদ হতে পলায়ন করবে না! যদিও সকল লোক ধ্বংস হয়ে যায়।
(৭) যখন লোকের মধ্যে মহামারী দেখা দিবে আর তুমি সেখানে থাকবে, তখন তথায় অবস্থান করবে (পলায়ন করবে না)।
(৮) তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী তোমার পরিবারের জন্য ব্যয় করবে (কার্পণ্য করে তাদের ভরণ-পোষণে কষ্ট দিবে না)।
(৯) তাদের (পরিবারের লোকদের) আদব-কায়দা শিক্ষা দান ব্যাপারে শাসন হতে কখনও বিরত থাকবে না ।
(১০) এবং আল্লাহ সম্পর্কে তাদের ভয় প্রদর্শন করতে থাকবে।

- [আহমাদ, মিশকাত হা/ ৫৫]


৩৩/১০০. আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসূল (সা) বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী জিনিস থেকে বেঁচে থাক। সাহাবীগণ বললেন, সেগুলো কী? রাসূল (সা) বলেন:

(১) শিরক করা
(২) যাদু করা
(৩) অবৈধভাবে মানুষ হত্যা করা
(৪) সূদ ভক্ষণ করা
(৫) ইয়াতীমের সম্পদ ভক্ষণ করা
(৬) যুদ্ধে মাঠ হতে পালিয়ে যাওয়া এবং
(৭) নিরীহ সতীসাধ্বী ঈমানদার নারীদের প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেওয়া।

- [বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৭]


৩৪/১০০. আনাস ইবনে মালিক (রা) বলেন, নবী করীম (সা) বলেছেন, তোমরা আমার থেকে ছয়টি জিনিস গ্রহণ কর, আমি তোমাদের জন্য জান্নাত এর ব্যবস্থা করবো।

(১) তোমাদের কেউ কথা বললে মিথ্যা বলবে না,
(২) ওয়াদা করলে খেলাফ করবে না,
(৩) আমানত রাখা হলে খিয়ানত করবে না,
(৪) (বেগানা নারী-পুরুষ হতে) চক্ষু নীচু রাখো,
(৫) (অন্যায় কর্ম থেকে) হাত বিরত রাখো,
(৬) লজ্জাস্থান হিফাযতে রাখো।

- [বায়হাকী, তারগীব হা/ ৪১৭৮]


৩৫/১০০. আবু যার (রা) বলেন, নবী করিম (সা) বলেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা তিন শ্রেণীর লোকের সাথে কথা বলবেন না, তাদের প্রতি করুণার দৃষ্টি দিবেন না, তাদের পরিশুদ্ধও করবেন না, বরং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

আবু যার (রা) বলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা)! তারা কারা?

রাসূল (সা) বললেন,

(১) গিঁটের নিচে কাপড় পরিধানকারী,
(২) অনুগ্রহ করে প্রকাশকারী,
(৩) মিথ্যা কসমের মাধ্যমে মাল বিক্রয়কারী।

- [মুসলিম, মিশকাত হা/ ২৬৭৩]


৩৬/১০০. আবু ওমামা বাহেলী (রা) বলেন, নবী করীম (সা) বলেছেনঃ

আল্লাহর নিকট দুটি ফোঁটা এবং দুটি চিহ্নের চেয়ে প্রিয় কিছু নেই।

১. আল্লাহর ভয়ে চক্ষু হতে প্রবাহিত পানির ফোঁটা,
২. আল্লাহর রাস্তায় প্রবাহিত রক্তের ফোঁটা।

আর প্রিয় (দুটি) চিহ্ন হচ্ছে-

১. আল্লাহর পথে জখমের চিহ্ন,
২. আল্লাহর ফরয আদায় করতে করতে পায়ে বা কপালের চিহ্ন।

- [তিরমিযী, আত তারগীব হা/ ৪৭১৭]


৩৭/১০০. মু'আবিয়া ইবনু হায়দা (রা) বলেন, রাসূল (সা) বলেছেনঃ

তিন শ্রেণীর মানুষ রয়েছে যাদের চক্ষু জাহান্নাম দেখবে না।

১. যারা আল্লাহর রাস্তায় পাহারা দেয়,
২. যারা আল্লাহর ভয়া কাঁদে,
৩. যারা বেগানা নারীকে দেখে চক্ষু নীচু করে।

- [আত তারগীব হা/ ৪৭১৩]


৩৮/১০০. আলী (রা) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেছেন, এক মুমিনের উপর অপর মুমিনের ছয়টি হক্ব রয়েছে=

(১) যখন কোন মুসলিমের সাথে সাক্ষাত হবে তখন সালাম দিবে,
(২) কেউ দাওয়াত দিলে তার ডাকে সাড়া দিবে,
(৩) যখন কেউ হাঁচি দিবে তার উত্তর দিবে (ইয়ারহামুকাল্লাহ বলবে),
(৪) কোন মুসলিম অসুস্থ হলে তার খোঁজ-খবর নিবে,
(৫) কোন মুসলিমের মৃত্যু হলে তার জানাযায় শরীক হবে এবং
(৬) নিজের জন্য যা পছন্দের করবে অন্যের জন্যও তাই পছন্দ করবে।

- [তিরমিযী, মিশকাত হা/ ৪৪৩৮]


৩৯/১০০. আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেন, রাসূল (সা) বলেছেন:

"যার অন্তরে সরিষা সমপরিমাণ ঈমান আছে, সে জাহান্নামে যাবে না। আর যার অন্তরে সরিষা সমপরিমাণ অহংকার আছে সে জান্নাতে যাবে না।"

- [মুসলিম, মিশকাত হা/ ৫১০৮]


৪০/১০০. আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন,

"মুসলমান যখন মসজিদের দিকে রওনা হয় সে তার ঘরে ফিরে আসা পর্যন্ত তার প্রতি কদমে আল্লাহ একটি নেকী দান করেন এবং একটি করে গোনাহ মোচন করেন।"

- [আত তারীখুল কাবীর, আস-সহীহা হা/ ১০৬৩]


৪১/১০০. জাবির (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) আমাদেরকে চারটি কাজের আদেশ ও পাঁচটি কাজ থেকে নিষেধ করেছেন:

(১) যখন ঘুমাবে দরজা বন্ধ করবে,
(২) মশকের মুখ বেঁধে রাখবে,
(৩) পাত্র ঢেকে রাখবে,
(৪) বাতি নিভিয়ে দিবে। কারণ শয়তান (বদ্ধ) দ্বার খুলতে পারে না, (বন্ধ) মশক খুলতে পারে না এবং (ঢাকা) পাত্র উন্মুক্ত করতে পারে না । আর দুষ্ট ইঁদুর গৃহবাসীসহ ঘর পুড়িয়ে ফেলতে পারে।

(ক) বাম হাতে খাবে না,
(খ) বাম হাতে পান করবে না,
(গ) এক পায়ে জুতা পরিধান করে হাটবে না,
(ঘ) ইশতেমালুস সাম্মা (চাদরের দু'মাথা বিপরীত দিক থেকে কাঁধের উপরে তুলে শরীর জড়িয়ে পরিধান করা) অবস্থায় চাদর পরিধান করবে না,
(ঙ) লুঙ্গি পড়ে লজ্জাস্থান উন্মুক্ত রেখে নিতম্ব মাটিতে রেখে হাটুদ্বয় খাড়া করে একটি কাপড় দ্বারা হাটুদ্বয়কে জড়িয়ে বসবে না।

- [ইবনু হিব্বান, মুসনাদে আহমাদ, আস-সহীহা হা/ ২৯৭৪]


৪২/১০০. আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন:

"যে ব্যক্তি জিহাদ না করে বা জিহাদের কামনা পোষণ না করে মারা যায় সে মুনাফিক্বী অংশ বিশেষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মারা যাবে।"

- [মুসলিমঃ ১৯১০; নাসায়ীঃ ৩০৯৭; বুলুগুল মারামঃ ১২৫৯]


৪৩/১০০. আবু হুরায়রা (রা) থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণিত:

"নিশ্চয়ই আল্লাহ (এমন) দুই ব্যক্তিকে দেখে হাসেন যারা একজন অপরজনকে হত্যা করে, অতঃপর আল্লাহ তা'আলা উভয়কে জান্নাতে প্রবেশ করান। তাদের একজন কাফির, যে অপরজনকে হত্যা করে । এরপর সে ইসলাম কবুল করে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করে নিহত হয়।"

- [মুসনাদে আহমাদ, আস-সহীহা হা/ ২৫২৫]


৪৪/১০০. আবু হুরায়রা (রা) বলেন, রাসুল (সা) বলেছেন,

“সাত শ্রেণীর লোককে আল্লাহ সুবাহানওয়া তা'আলা তাঁর ছায়া দিবেন, যেদিন (বিচার দিবসে) তাঁর ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া থাকবে না।

(০১) ন্যায় পরায়ণ শাষক,
(০২) সেই যুবক যে আল্লাহর ইবাদতে বড় হয়েছে,
(০৩) সে ব্যক্তি যার অন্তর সর্বদা মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকে, সেখান থেকে বের হয়ে আসার পর তথায় ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত,
(০৪) এমন দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর ওয়াস্তে পরস্পরকে ভালোবাসে । আল্লাহুর ওয়াস্তে উভয়ে মিলিত হয় এবং তাঁর জন্যই পৃথক হয়ে যায়,
(০৫) এমন ব্যক্তি যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে আর তাঁর চক্ষু অশ্রু বিসর্জন দিতে থাকে,
(০৬) এমন ব্যক্তি যাকে কোন সভ্রান্ত সুন্দরী নারী আহবান করে আর সে বলে আমি আল্লাহকে ভয় করি এবং
(০৭) সে ব্যক্তি যে গোপনে দান করে এমনকি তাঁর বাম হাত জানতে পারে না তাঁর ডান হাত কি দান করে।”

- [বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/ ৬৪৯]


৪৫/১০০. আবু আইয়ুব (রা) হতে বর্ণিত । রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন:

"কোন লোকের জন্য বৈধ নয় যে, সে তার ভাই- এর সাথে তিন দিনের অধিক এমনভাবে সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে যে, দু'জনের দেখা হলেও একজন এদিকে আরেকজন ওদিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখবে। তাদের মধ্যে যে আগে সালাম দিবে, সেই উত্তম লোক।"

- [বুখারীঃ ৬২৩৭, মুসলিমঃ ২৫৬০, বুলুগুল মারামঃ ১৪৬১]


৪৬/১০০. আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন:

মুনাফিকের আলামত তিনটি- (১) যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, (২) যখন অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করে এবং (৩) আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে।

- [বুখারীঃ ৩৩; মুসলিমঃ ৫৯; বুলুগুল মারামঃ ১৪৮৫]


৪৭/১০০. আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন:

"তোমরা কারো প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করো না। কেননা, খারাপ ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা।"

- [বুখারীঃ ৫১৪৩; মুসলিমঃ ১৪১৩; তিরমিযীঃ ১৯৮৮]


৪৮/১০০. খাওলাহ আনসারীয়া (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছি যে,

"কিছু লোক আল্লাহর দেয়া সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যয় করে, কিয়ামতের দিন তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত।"

- [বুখারীঃ ৩১১৮; তিরমিযীঃ ২৩৭৪; বুলুগুল মারামঃ ১৪৯৩]


৪৯/১০০. হুযাফাহ (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন

"চোগলখোর কক্ষনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না।"

- [বুখারীঃ ৬০৫৬; মুসলিমঃ ১০৫; বুলুগুল মারামঃ ১৫০৫]


৫০/১০০. আবু সিরমাহ (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন:

"যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের ক্ষতি করবে প্রতিদানে আল্লাহ তা'আলাও তার ক্ষতি করবেন। আর যে ব্যক্তি কোন মুসলিমকে কষ্ট দেবে আল্লাহ এর প্রতিদান তাকে কষ্ট দিবেন।"

- [আবু দাউদঃ ৩৬৩৫; তিরমিযীঃ ১৯৪০; বুলুগুল মারামঃ ১৫০১]




Post a Comment