তৎকালীন আরববাসীদের জাহেলিয়াতঃ ২য় পর্ব


উম্মুল মুমেনিন আয়িশাহ (রা.) কর্তৃক তথ্যাদি সূত্রে জানা যায় যে, অন্ধকার যুগে আরব সমাজে বিবাহের চারটি প্রথা প্রচলিত ছিলো,

১. যা বর্তমান সমাজে প্রচলিত বিবাহর ন্যায় ছিলো । যেখানে উভয় পক্ষের মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমে স্বীকৃতি লাভের পর বর কনেকে ধার্য মোহর দিয়ে বিয়ে করতো ।

২. এই প্রথাকে বলা হতো 'নিকাহে ইসতিবযা' । এখানে জ্ঞানী, গুণী, শক্তিধর কোন সুপুরুষের সঙ্গে সঙ্গম ক্রিয়ায় লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে উৎকৃষ্ট সন্তান লাভ করাই মূল উদ্দেশ্য । এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে যখন কোন মহিলা ঋতু জনিত অপিবত্রতা থেকে পবিত্র হতেন তখন তাঁর স্বামী তাঁকে তাঁর পছন্দ মতো কোন সুপুরুষের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য প্রস্তাব পাঠাতেন । এ অবস্হায় স্বামী তার নিকট হতে পৃথক হয়ে থাকতেন, কোনো ক্রমেই তাঁর সঙ্গ সঙ্গম ক্রিয়ায় লিপ্ত হতেন না । এদিকে সস্ত্রী প্রেরিত প্রস্তাব স্বীকৃতি লাভ করলে গর্ভ ধারণের সু-স্পষ্ট আআলামত প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত তার সঙ্গে সঙ্গম করতেন । তারপর গর্ভ ধারণের আলামত সু-স্পষ্ট হলে তাঁর স্বামী যখন চাইতেন তাঁর সঙ্গে মিলিত হতেন । হিন্দুস্হানী পরিভাষায় এ বিবাহকে 'নিয়োগ' বলে ।

৩. এই প্রথাটি আরো জগণ্য । এতে দশ থেকে কম সংখ্যক ব্যক্তির সমন্বয়ে একটি দল একত্রিত হতো এবং সকলে পর্যায়ক্রমে একই মহিলার সঙ্গে সঙ্গম করতো । এর ফলে এ মহিলা গর্ভ ধারণের পর সন্তান জন্ম দেওয়ার পর ঐ সব সঙ্গমকৃত পুরুষদের ডাকতো । প্রচলিত প্রথায় বাধ্য হয়েই সংশ্লিষ্ট সকলকে উপস্হিত হতে হতো । তখন তাদের মধ্য থেকে বে কাউকে উদ্দেশ্য করে মহিল বলতো 'হে অমুক, আমার গর্ভজাত এ সন্তান আপনার' । এবং তাকে সবাই স্বীকৃত দিতো ।

৪. নারী-পুরুষের 'বিবাহ ও মিলন' নাম দিয়ে এটি সবচেয়ে জগণ্য প্রথা । এই প্রথাটি পূর্বেরটির মতোই । তবে এখানে পুরুষের সংখ্যা নির্দিষ্ট নয় । অর্থাৎ এক ধরণের পতিতাবৃত্তি । আর এইসব মহিলাদের বাড়িতে তাদের পেশার প্রতিক হিসেবে নিশান থাকতো ।

আল্লাহর নির্দেশে আর এইসব অন্ধকারচ্ছন্ন প্রথার অবসান গঠিয়েছেন রাসূল মুহাম্মদ (সা.) ।

কিন্তু সেই অন্ধকারের দিকেই বর্তমান সমাজ ব্যবস্হা ধাবিত হচ্ছে । আর এর প্রধান কারণ হলো মানুষ ইসলাম ধর্মকে অবজ্ঞা করে নিজের ইচ্ছেমত চলছে ।

সূত্রঃ আর-রাহীকুল মাখতুম

1 Comments

  1. আল্লাহতায়ালা আমাদের হেদায়েত দান করুন আমিন।

    ReplyDelete

Post a Comment