রাসূল (সাঃ) এর প্রকাশ্য দ্বীন প্রচার শুরুঃ ১ম পর্ব


ভাতৃত্ববন্ধনে আবদ্ধ ও পরস্পর সাহায্য সহযোগীতার মাধ্যমে মুমিনদের যখন একটি দল সৃষ্টি হলো এবং রিসালাতের বোঝা বহনের মতো যোগ্যতা অর্জিত হলো ও ইসলাম তারা নিজ অবস্হানকে কিছুটা শক্তিশালী করতে সক্ষম হলো তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রকাশ্যভাবে ইসলামের দাওয়াত দেয়া ও বাতিল দীন, উপাস্যদেরকে উত্তম পন্থায় প্রতিহত করতে আদিষ্ট হলেন । এ বিষয়ে সর্বপ্রথম আল্লাহ তাআ'লার এ বাণী অবতীর্ণ হয়ঃ

"আর তুমি সতর্ক কর তোমার নিকটাত্মীয় স্বজনদের ।" -(আশ-শুআরাঃ ২১৪)

এটি হচ্ছে সূরাহ শু'আরার আয়াত এবং এ সূরাতে সর্বপ্রথমে মূসা (আ.) এর ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে এতে মূসা (আ.) এর নবুওয়াতের প্রারম্ভিক কাল কিভাবে অতিবাহিত হয়েছিল, বনি ঈসরাইলসহ কিভাবে তিনি হিজরত করে ফিরাউনের কবল থেকে পরিত্রাণ লাভ করলেন এবং পরিশেষে কিভাবে স্বদলবলে ফিরাউনকে নিমজ্জিত করা হলো সেসব কথা বলা হয়েছে ।

প্রথম সম্মেলনঃ
যাহোক, এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর নাবী কারীম (সা.) বনু হাশিম গোত্রকে একত্রিত করে এক সম্মেলনের আয়োজন করেন । সেই সম্মেলনে বনুম মুত্তালিব বিন আবদে মানাফেরও একদল লোক উপস্হিত ছিলেন । সম্মেলনে উপস্থিত লোকদের সংখ্যা ছিলো প্রয় পঁয়তাল্লিশ জন । সম্মেলনের শুরুতে রাসূলুল্লাহ (সা.) আলোচনা শুরু করবেন ঠিক এ মূহুর্তে আবু লাহাব আকস্মিকভাবে বলে উঠলেন -

'দেখ এরা সকলেই তোমার নিকট আত্মীয়- চাচা, চাচাতো ভাই ইত্যাদি । বাচালতা বাদ দিয়ে এদের সঙ্গে ভালোভাবে কথাবার্তা বার চেষ্টা করবে ।তোমার জানা উচিত যে তোমার জন্য সকল আরববাসীর সঙ্গে শত্রুতা করার শক্তি আমাদের নেই । তোমার আত্মীয়-স্বজনদের পক্ষে তোমাকে ধরে কারারুদ্ধ করে রাখাই কর্তব্য । সুতরাং তোমার জন্য তোমার পিতৃ-পরিবারই যথেষ্ট । তুমি যদি তোমার ধ্যান-ধারণা এবং কথাবার্তায় অটল থাকো তবে এটা অনেক সহজ এবং স্বাস্বাভাবিকযে সমগ্র কুরাইশ গোত্র তোমার বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করবে এবং অন্যান্য আরব গোত্র এ ব্যাপারে সহযোগীতা করবে । তারপর এটা আমার জানার বিষয় নয় যে, স্বীয় পিতৃপরিবারের আর অন্য কেউ তোমার চেয়ে বড় সর্বনাশ হতে পারে ।'

আবু লাহাবের এ জাতীয় অর্থহীন আস্ফালনের প্রেক্ষাপটে নাবী কারীম (সা.) সম্পূর্ণ নিরবতা অবলম্বন করলেন এবং ঐ নীরবতার মধ্য দিয়েই সম্মেলন শেষ হয়ে গেল ।

সূত্রঃ আর-রাহীকুল মাখতুম, পৃষ্ঠা নং ১০৪


Post a Comment